অফিসিয়াল সিক্রেসি বনাম সাংবাদিকতা
শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ: (১৮ মে ২০২১ এ প্রকাশিত )
প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অফিসিয়াল সিক্রেসি আইনে। গোয়েন্দা সংস্থা, প্রতিরক্ষা সংস্থা সমূহ এবং নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যতিত একটি রাষ্ট্রের সিক্রেট কিছু থাকতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি না। এর বাইরে যদি কিছু সিক্রেট থাকে সেটি হচ্ছে রাষ্ট্রের সংস্থা সমুহের লোকজনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। সাংবাদিক রোজিনা সেই অপরাধমূলক কাজের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে রাষ্ট্রের হাতে লাঞ্চিত ও নির্যাতিত হচ্ছেন।
রোজিনা কোন সংবাদপত্রে কাজ করছেন সেটি বড় কথা নয়; সেই সংবাদপত্রটি বর্তমান সরকার ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার বন্ধু কিনা সেটিও বড় কথা নয়, কথা হচ্ছে সাংবাদিক হিসেবে রোজিনা তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যেখানে রাষ্ট্র ব্যবস্থায় অবস্থানরত অপরাধীদের দ্বারা নির্যাতিত ও হেনস্তা হয়েছেন, হচ্ছেন; সেখানে রাষ্ট্রের কোন অংগই তাকে সহায়তা করছে না; কেবলমাত্র ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক রিমান্ড আবেদন বাতিল করা ছাড়া।
পৃথিবীর সবাই যেখানে এ বিষয়টি জেনে গেছে মুহূর্তে; সেখানে শেখ হাসিনা বা তার মন্ত্রীরা বা সচিবেরা এটি জানেন নাই; জেনে কোন আদেশ দেন নাই, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। বিশ্বাসযোগ্য এটাই যে এই রাষ্ট্রের প্রতিটা বিভাগ শেখ হাসিনাসহ সবাই এই অপরাধীদের পক্ষের লোক; হয় অংশীদার হিসেবে না হয় অক্ষম হিসেবে। যেমন ম্যাজিস্ট্রেট পুরো বিষয়টা জেনেও তাকে জেলে পাঠিয়েছে।
সাংবাদিক জগতকে দেখুন, এদের উল্লেখযোগ্যরা সরকারের দালালীতে লিপ্ত হয়ে এই পেশাকেই কলংকিত করে দিয়েছে। যে কারনে প্রতিবাদও শক্ত হচ্ছে না। এই অপরাধী রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারছে না।
তবে নাগরিকগণ সবাই জানেন কে অক্ষম আর কে অপরাধের বা দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে দুর্নীতিবাজরা এখন তাদের এই প্রচারনায় লজ্জিত হয় না। সাউথ ইন্ডিয়ান সিনেমার ভিলেনদের মতো এরা আত্মহারা হন ; এমনকি এদের পরিবারের লোকজন, আত্মীয় স্বজন এবং সন্তানেরা গর্ববোধ করে দাপটের সাথে।
তবে জাতি লজ্জিত এদের জন্য, জাতি লজ্জিত নিজের অক্ষমতার জন্য যে এদের বঙ্গোপসাগরে আবর্জনার মতো ছুঁড়ে ফেলতে পারছে না বলে। আমিও লজ্জিত একই কারনে।