প্রসঙ্গ: মাফিয়া
শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ: (২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ এ প্রকাশিত)
ইদানীং ‘’মাফিয়া’’ শব্দটি পুঁজিবাদী রাজনীতির সাথে জড়িত অধিকাংশ লোকজনই উচ্চারন করা শুরু করেছেন। একসময় আমিই এবং কিছু বাম ঘরানার লোকজন এটির চর্চা করতাম বেশী। মূলতঃ জাতীয় পূঁজির বিকাশের বিপক্ষে ব্যক্তি পূঁজির অবৈধ বিকাশকে যারা লালন করেন তাদেরকেই অর্থনৈতিক মাফিয়া হিসেবে আমরা চিহ্নিত করি। কারন ব্যক্তি পূঁজির ধারক বাহকরা ৯৯% এরও বেশী অসাধু উপায়ে এটি হাসিল করেন বা করার জন্য মনস্থির করে রাখেন। এখন এই অসাধু ব্যক্তিপূঁজির ধারকেরাই কিন্তু রাজনীতির পক্ষ বিপক্ষের মুল স্রোত।
সাধারন মানুষ এদের দ্বারাই প্রভাবিত হয়ে একবার অন্ধকারের এইপাশে না হয় ঐপাশে গিয়ে হাপিত্যেশ করেন। মানুষ তার মুক্তির আসল রুপ আর দেখে না। শুধু মুক্ত হয় আরও অসাধু পুঁজি তৈরির পথ। আর আওয়াজ তুলে হারিয়ে যায় হাজার হাজার তাজা প্রান। এটাই হচ্ছে আমাদের জানা নাজানা কথিত রাজনীতির স্বরুপ। মূলতঃ জেনে নাজেনে আমরাই আমাদের ভেতর মাফিয়া স্বত্বা লালন করি; খুঁজি শর্টকাট পথ। যে কারনে মাফিয়াদের বিরুদ্ধে আরেক মাফিয়াকেই মেনে নেই চালক হিসেবে।
একসময় বাম ঘরানার লোকজন সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে কথা বলতেন, সতর্ক করতেন এনজিওর সম্ভাব্য গ্রাস সম্পর্কে। পরে দেখা গেলো বাম ঘরানার লোকজনই এনজিওর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে গেলেন সবচেয়ে বেশী। ফুলে ফেঁপে এক একজন হয়ে গেলেন পূঁজির মালিক। আর সেই পূঁজির বিকাশ হলো ৯৯% অসাধু উপায়ে। হয়ে গেলেন মাফিয়াদের অংশ।
ইসলামী ঘরানার লোকজনও কিন্তু ব্যক্তি পূঁজির বিকাশে তাদের সাধুতাকে বিসর্জন দিলেন বিপ্লবের ছুতোয়। তারা স্বীকার করুন আর নাই করুন তারা এই পূঁজির বিকাশে অসাধু পন্থার সাথে আপোষ করেছেন। আর নিজেদের মধ্যে পয়দা করেছেন অনেক মাফিয়া। আমরা তাদেরকেও চিনি। যেমন চিনি মাফিয়াদের সাথীরা কক্ষচ্যুত হয়ে মনোবেদনায় বিপ্লবের ডাক দেয়।
সাধু সাবধান। বিপ্লব হলে হতে হবে জনতার পক্ষ থেকে, মাটির গন্ধ নিয়ে বেড়ে ওঠা কোন আমজনতার সন্তানদের নেতৃত্বে, কোন বর্তমান বা সাবেক মাফিয়ার নেতৃত্বে নয়; তবেই বিপ্লব হলে তা জাতির বিপ্লব হবে। মঙ্গল হবে আমজনতার।