শেখ মহিউদ্দিন আহমেদঃ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে তাইওয়ান যখন ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনকে (WHO) মানবদেহ থেকে মানবদেহে পরিবাহিত ভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক করে, তখন WHO প্রধান বিষয়টিতে অজ্ঞাত কারনে এড়িয়ে যান; এমনকি জানুয়ারি ২০২০ মাসেও তিনি এই ভাইরাস মানব শরীরের সংস্পর্শে ছড়ায় না বলে বিবৃতি দেন।
এখন কথা উঠেছে WHO এর ডিরেক্টর জেনারেল হিসেবে ২০১৭ এ চীনের সার্বিক সহায়তায় নিয়োগ পাওয়া ইরিত্রিয়ায় জন্ম নেয়া ইথিওপিয়ার সাবেক কমিউনিস্ট রাজনীতিক ড. টেড্রস অ্যাডহানম গেব্রেইয়েসুস এর সাথে চীনের গোপন সম্পর্ক নিয়ে, যিনি ইথিওপিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন।
কথাগুলোর অবতারনা হচ্ছে বর্তমান বিশ্ব মহামারি করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর বিস্তার নিয়ে এবং এর সাথে চীনের সম্পর্ক নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আলোড়ন চলছে তা খতিয়ে দেখা। এর মুল কারন এই ভাইরাসটি বিস্তার লাভ করেছে চীনের উহান শহর থেকে, যে শহরে চীনের জীবাণু তৈরির একটি পরীক্ষাগার রয়েছে এবং এটি বৃহৎ শক্তিগুলোর সবাই ওয়াকিবহাল ছিল। এমনকি এমন কিছু ঘটতে চলেছে এটি কম বেশী যুক্তরাষ্ট্র অবহিত ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রেসিডেন্ট বুশ জুনিয়র এর আমল থেকেই এ বিষয়ে সতর্ক করছিল। প্রেসিডেন্টগণও জনগনকে সতর্ক করতেন। শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে পুরো পৃথিবীকে সমস্যায় ফেলে দিয়েছেন।
প্রশ্ন হচ্ছে চীনের মতো উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি ভাইরাস ছড়ানোর মতো কাজটি করবে কেন? কিসেইবা প্রমান হবে যে চীন ইচ্ছে করেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছে! এগুলো বিলিয়ন ডলার প্রশ্ন। চীনপন্থীদের পাল্টা দাবিও রয়েছে যে যুক্তরাষ্ট্র এই ভাইরাস ছড়িয়ে চীনকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে। এর একমাত্র ছোট্ট উত্তর হচ্ছে, এই পুরো মহা বিপর্যয়ে সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্থ কোন দেশ এবং লাভবান হয়েছে কোন দেশ; এটি বিশ্লেষণ করলেই উত্তর সহজ অংকের মত।
তারপরেও তথ্য উপাত্ত এবং বিশ্ব রাজনীতি ও মহামারীর পরিস্থিতি একটু নজর দিলেই এ অপকর্মে সম্পৃক্ত দেশের চিত্রটি আরও পরিস্কার হয়ে যাবে। কেবলমাত্র চীনের এ মহামারীতে একমাত্র উহান ছাড়া কোন প্রদেশে ক্ষতি হয়নি, বরং অর্থনৈতিকভাবে চীনই কেবলমাত্র সংহত রয়েছে; শুধু তাই নয় রদ্দি ও পচা মাস্ক ও পিপিই বিভিন্ন দেশে বিক্রি করে এর মধ্যেও লাভবান হচ্ছে এবং সকল দেশের সাথে প্রতারনা করে চলেছে।
এবার দৃষ্টি দেই চীনের বন্ধু দেশগুলোর দিকে যেখানে ভাইরাসের থাবা এতটাই কম কিভাবে! দৃষ্টি দেই চীনের সম্ভাব্য আগ্রাসী নেটওয়ার্ক এর দিকে, সে কোন কোন দেশকে কব্জায় নিতে চায়, সেই দেশগুলোর হাল হকিকত এবং অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রকে কিভাবে স্তব্দ করে দিয়েছে আগামি দিনের জন্যে, দৃষ্টি ফেরাই সেই দিকে। (চলবে)
লেখকঃ রাজনীতিক, সাংবাদিক ও স্ট্র্যাটেজিক এনালিস্ট
Hits: 84